সিসিক নির্বাচন: ভোট নিয়ে ইসির ‘শেষ পরীক্ষা’

প্রকাশিত: ৬:৫০ পূর্বাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৩

সিসিক নির্বাচন: ভোট নিয়ে ইসির ‘শেষ পরীক্ষা’

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি করপোরেশনে ধাপে ধাপে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশালের ভোট। আগামীকাল বুধবার শেষ ধাপে সিলেটে ভোটযুদ্ধ শুরু হচ্ছে। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হতে যাওয়া এই নির্বাচনও যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে শেষ হয়, সেজন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতির পাশাপাশি বেশ সতর্ক ইসি।

অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া সিটির এই নির্বাচন হলেও বরাবরই ইসি ভালো ভোট করে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। তবে গাজীপুর ও খুলনায় অনেকটা শান্তিপূর্ণ ভোট সারলেও বরিশালে ভোটের দিনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থীকে রক্তাক্ত করার ঘটনায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিল নির্বাচন কমিশন। তাই আগামীকালের (বুধবার) ভোটকে কেন্দ্র করে যাতে এমন পরিস্থিতি ফের তৈরি না হয়, সেজন্য সতর্ক কমিশন।

যদিও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দুই সিটির ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীদের সঙ্গে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে দুই সিটিতে মেয়র পদের চেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলতা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান বলেছেন, ‘আমাদের কাছে সব প্রার্থী ও দল সমান। ভোটারদের নির্বিঘ্ন পরিবেশ তৈরিতে আমরা বদ্ধপরিকর। নির্বাচনে সব অংশীজনের সক্রিয় এবং আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।’

ইসি সূত্রে জানা গেছে, বরিশালে ভোটের মাঠে মেয়রের ওপর হামলা ঘটনা অনেকটা ভাবিয়ে তুলছে ইসিকে। পাশাপাশি সেখানে ভোটের পরও পরিস্থিতিতে অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। যে কারণে সিলেট-রাজশাহীতেও কোনোভাবে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটতে পারে, সেজন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ইসির পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে ভোটের আগে-পরে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে, সেজন্য মাঠে ২৪ জন ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তারা মোট পাঁচদিন মাঠে থাকবেন।

এদিকে, অন্য নির্বাচনের মতো এই সিটির ভোটও সরাসরি সিসি ক্যামেরায় ঢাকা থেকে পর্যবেক্ষণ করার কথা জানিয়েছেন কমিশনার আহসান হাবিব। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন পূর্ব, ভোটের দিন ও নির্বাচনোত্তর অনিয়ম, গোলযোগ ও সহিংসতা যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তুত করা তালিকা অনুযায়ী এখানকার ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ)। এরমধ্যে ১৮টি ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি ৫৮টি কেন্দ্র সাধারণ (ঝুঁকিমুক্ত) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আগে ২৭ ওয়ার্ড নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন থাকলেও বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে সিসিকে এখন মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৪২টি। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীতে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৬ জন।

কী প্রস্তুতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর?

নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটের দিনে সব জায়গায় নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে।

সিলেটের প্রস্তুতির বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ভোটের দিন শুধু পুলিশই থাকবে ২ হাজার ৬০০ জন। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী পুলিশের সহায়তায় র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন থাকবে। আর অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর প্রতিটিতে ২ জন কর্মকর্তা ও ৪ জন কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে একজন কর্মকর্তা ও ৪ জন কনস্টেবল ও সাধারণ কেন্দ্রগুলোর প্রতিটিতে একজন কর্মকর্তা ও তিনজন কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করবেন।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার সুদীপ দাস বলেছেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে করতে আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ভোটের দিনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

এস এ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ